এ সময়ের ফ্যাশন (খবরের কাগজ)

এ সময়ের ফ্যাশন (খবরের কাগজ)
এ সময়ের ফ্যাশন
মডেল: আসিন জাহান, পোশাক: ক্লাব হাউজ, কৃতজ্ঞতা: পানশী ধানমন্ডি, ছবি : শরিফ মাহমুদ

 

পোশাকে বৈচিত্র্য পছন্দ করেন ফ্যাশনপ্রেমী তরুণীরা। আরামদায়ক, কাটছাঁটে বৈচিত্র্য আছে এমন পোশাকের প্রতি তাদের আকর্ষণটা বেশি। ফ্যাশন সচেতন তরুণীরা রুচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন ফ্যাশনের পোশাক বেছে নিচ্ছেন। চটজলদি পরার জন্য বা ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে সালোয়ার-কামিজের পাশাপাশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে এসব পোশাক। এ সময়ের পোশাক নিয়ে লিখেছেন শাহিনুর আলম কলি

এই সময়ের তরুণীরা লং, সেমি লং, শর্ট- সব পোশাকই পরছেন। পালাজ্জো কিংবা ফ্লেয়ার প্যান্টের সঙ্গে টপস, শার্টের কদর এখন ব্যাপক। টপসের সঙ্গে গারারা প্যান্ট, স্কার্ট প্যান্ট এসব পরতে দেখা যাচ্ছে। একটু ভিন্নভাবে বানানো পোশাকগুলোই ফ্যাশন ট্রেন্ডে পরিণত হচ্ছে। টপ, কুর্তার পাশাপাশি কো-অর্ড খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এমব্রয়ডারি, কারচুপির কাজের চেয়ে ফ্লোরাল প্রিন্টের পোশাক চাহিদা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রঙ হিসেবে বেছে নেওয়া হচ্ছে অ্যাশ, লাইট ব্রাউন, মেরুন, সাদা, কালো, ক্রিম, মিন্ট, লাল, পিংক, সবুজ, নীল, গ্রিন পিস ও সি গ্রিন, ম্যাজেন্ডা, স্কাই ব্লু ও মাস্টার্ড। পোশাকের মোটিফ ও নকশায় রয়েছে তারুণ্যের আমেজ।

বর্তমানে পোশাকের নকশা ও কাটিং- সবকিছুতেই থাকছে আধুনিকতা। এমনটাই জানালেন ক্লাব হাউসের ফ্যাশন ডিজাইনার জামান বিন নাজির। তিনি জানান, ঢোলা প্যাটার্ন, ওভারসাইজড পোশাকের চল ফিরেছে। মূলত পূর্ব ও পশ্চিমা ধাঁচের সংমিশ্রণ ঘটেছে পোশাকে। ভিসকস, সুতি, লিনেন, জর্জেট কাপড়ের ভিন্ন কাটের পোশাগুলো সবাই পছন্দ করছে। ফিউশনধর্মী টপ, মিনি স্কার্ট, জাম্পস্যুট, টপ-বটম সেট এগুলোর নকশাও বেশ নজরকাড়া। এ ছাড়া কুর্তি, কামিজ ও টপে ফ্রিল, লেয়ার, ফ্লেয়ার, ক্রপড জনপ্রিয় পেয়েছে। বর্তমানে পোশাকগুলো হলো-


ভিন্ন কাটের স্কার্ট 
স্কার্ট জনপ্রিয় অনেক আগে থেকেই। স্কার্টে দেখা যাচ্ছে নতুন রূপ। স্কার্টের সঙ্গে টি-শার্ট, ফতুয়া তো পরা হয়ই- বাড়তি আকর্ষণ যোগ করছে বিভিন্ন কাটের কামিজ। ঘরোয়া আড্ডা থেকে অফিস- সব জায়গাতেই এ পোশাকটি মানিয়ে যায়। স্কার্ট পোশাক হিসেবে আরামদায়ক। চলতি ধারার স্কার্টের মধ্যে বোহেমিয়ান বা জিপসি স্কার্ট বেশ জনপ্রিয়। এগুলোর ঘের ও কুঁচি বেশি থাকায় খাটো টপের সঙ্গে ভালো মানায়। টপের হাতায় রয়েছে বিভিন্ন থ্রি কোয়ার্টার, বেলবটম কিংবা হাতা কাটা। গলা হতে পারে গোল, বোট নেক, ছোট কাটের হাই নেক। জায়গা বুঝে মানানসই স্কার্ট পরলে ভালো লাগবে।

ফ্লোরাল প্রিন্ট
পোশাকে ফ্লোরাল প্রিন্টের মধ্যে ভিন্ন ধাঁচের কাট বেশ জনপ্রিয় এখন। হ্যান্ডপেইন্টের নকশা, স্ক্রিন ও ডিজিটাল প্রিন্ট পোশাকের নতুন নতুন ফিউশন। প্রিন্টের মোটিফ হিসেবেও এখন ব্যবহৃত হচ্ছে নানা ধরনের ফুল। লতাপাতা ও ছোট ছোট জ্যামিতিক মোটিফের ব্যবহার হচ্ছে। মসলিন, সুতি, হাফসিল্ক, কোটা কাপড়ে করা হচ্ছে এসব নকশা। স্ট্রাইপ, বলপ্রিন্ট, শ্যাভরন প্যাটার্নসহ জিগজাগ প্যাটার্নেও থাকছে ডিজিটাল প্রিন্ট। পোশাকের জমিনে ছোট ছোট কোনা আকারের প্রিন্ট হলো শ্যাভরন প্রিন্ট। সুতি, লিলেন, সিল্ক, জর্জেট, লাইক্রা, পলিয়েস্টার, কাতান সিল্কের মধ্যে ফেব্রিক্সের এই প্রিন্ট ব্যবহার হচ্ছে। এই প্রিন্টে নীল, কমলা, বেগুনি, হলুদ, সবুজ এ ধরনের উজ্জ্বল রঙ বেশি ব্যবহার করা হয়। পোশাকে রংগুলো বেশ উজ্জ্বলভাবে ফুটে ওঠে। এ ধরনের পোশাক পরলে বেশ প্রাণবন্ত দেখায়।

কো-অর্ডের আধিপত্য 
একই রঙ ও প্রিন্টের কাপড়ের টু বা থ্রি-পিসের পোশাকই মূলত ট্রেন্ডি কো-অর্ড হিসেবে পরিচিত। ম্যাচিং টপ আর বটমের সমন্বয়ে তৈরি এ পোশাকের স্টাইল ফ্যাশন দুনিয়ায় এখন বেশ রমরমা। কো-অর্ড স্টাইলের দেখা যাচ্ছে নিত্যনতুন সব রূপে। কো-অর্ড সেট পরতে চাইলে সুতি, লিনেন বা আরামদায়ক জর্জেট ফেব্রিক বেছে নেওয়াই ভালো। সে ক্ষেত্রে পোশাকের রঙের ক্ষেত্রে নজর দিতে হয়। সাদা, বেবি পিংক, আকাশি, ধূসর, হলুদ বা যেকোনো প্যাস্টেল শেডের কো-অর্ড বেছে নেওয়া যেতে পারে। আর প্রিন্টের ক্ষেত্রে ফুলেল নকশা, জ্যামিতিক প্যাটার্ন, বিমূর্ত মোটিফের ছাপা, অ্যানিমেল সব ধরনের প্রিন্টই কো-অর্ড সেট পরতে পারেন।

টপ বটমের পোশাক 
ক্যাজুয়াল পোশাকে দেখা যাচ্ছে নতুন এক ধারা। টপ-সালোয়ার-কটি- এই তিনের সমন্বয়ে গঠিত পোশাকের এই সেটটিকে বলা হচ্ছে টপ বটম। এই পোশাক পরে চলাফেরা করে যেমন আরাম তেমনি ফ্যাশনেও স্টাইলিশ। পায়জামা ও ক্রপ টপের কাটে ক্যাজুয়াল টপ বটম সেটের আবহ। গরম একটু বেশি লাগলে কটিটা এভাবে ফেলে রাখতে পারেন কাঁধে। এই ধরনের পোশাকে সালোয়ারের ছাঁট একটু ঢিলেঢালা, অনেকটা পালাজ্জোর মতো হয়ে থাকে। কটির ছাঁটেও থাকে বৈচিত্র্য।

এই পোশাকের কাটছাঁট থাকে ভিন্নতা। কখনো হাঁটুর নিচ থেকে সালোয়ারের ঘের থাকে। আবার কখনো স্ট্রেটকাটে স্ট্রেচেবল কাপড়ে তৈরি হয় প্যান্ট। ক্রপটপে যেমন থাকছে প্রিন্টের কাপড়ের ব্যবহার, তেমনি আবার কখনো শাটিন কাপড়ে লেসের ব্যবহার দেখা যায়। যারা একটু হালকা পোশাক পরতে ভালোবাসেন, তাদের পছন্দ আবার কো-অর্ড স্টাইলে বানানো টপ বটম সেট। কো-অর্ড স্টাইলে টপ-বটম সেটটি তৈরি হলেও ওপরে থাকছে কনট্রাস্ট রঙের কটি। সব মিলিয়ে বলা যায় এই পোশাকের কাটছাঁটে ভিন্নতা এত বেশি যে কখনো আপনার পোশাকের সংগ্রহে তা একঘেয়ে ভাব আনবে না।

ছাঁটে ভিন্নতা
এবারের ফ্যাশনে মেয়েদের কুর্তির কাফতান বেশ চলছে। ডিজাইনের দিক থেকে লং কুর্তির সামনের হাফ বডিতে কুচি ও ঘেরে অনেক কুচির ডিজাইন করেছে। কাফতানে প্রাধান্য পেয়েছে ফ্লোরাল প্রিন্ট। বর্ডারে মোটা লেস বা পাইপিন দিয়ে কিছুটা জমকালো ভাব এনে দিয়েছে।

জমকালো আবহে
ফ্যাশনে তরুণীদের জন্য রয়েছে নানা ধরনের পার্টি ড্রেস। আধুনিক সময়ের তরুণীদের উৎসব-অনুষ্ঠানে শাড়ি পরতেও দেখা যায়। তাদের জন্য ডিজাইনাররা আবিষ্কার করছেন পরিবেশ ও সময় অনুযায়ী নান্দনিক শাড়ি। কুচি দেওয়া শাড়ির পাড় এখন বেশ চলছে। পরিবেশ অনুযায়ী পোশাক পরাটা খুবই জরুরি। তা না হলে নিজেকে বেমানান লাগে।

কলি

 

ছবি: ক্লাবহাউস (Klubhaus bd news)

Source:https://www.khaborerkagoj.com/fashion-plus/826191


Leave a comment

Please note, comments must be approved before they are published